আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিতে টাকা ও পণ্য জমা দেওয়া লাখো গ্রাহকের আশা ছিল প্রতিষ্ঠানটির লকারে হয়তো তাদের সম্পদের একটি অংশ থাকতে পারে। এমন আশায় বুক বেঁধে ছিলেন ইভ্যালির গ্রাহক ও মার্চেন্টরা।
কিন্তু সেই লকার কাটার পর হতাশা ছাড়া কিছুই মেলেনি। লকারে কোনো সম্পদ নেই। রয়েছে শুধু কয়েকটি ব্যাংকের শতাধিক চেক বই। আর নগদ পাওয়া গেছে দুই হাজার ৫৩০ টাকা।
সোমবার দুপুরে ইভ্যালির ধানমন্ডি কার্যালয়ে যান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সেখানে দুটি লকার কেটে এই চেক বই ও নগদ টাকা পাওয়া যায়।
ইভ্যালি নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের পাঁচ সদস্যের কাছে পাসওয়ার্ড না থাকায় ভাঙা হয় লকার।
বেলা ৩টার দিকে ইভ্যালির কার্যালয় থেকে লকারগুলো বের করা হয়। লকার ভাঙার জন্য ধানমন্ডিতে ইভ্যালি কার্যালয়ে উপস্থিত হন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসফিয়া সিরাত।
‘বিদেশে টাকা পাচার করে থাকতে পারেন ইভ্যালির রাসেল’
বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক জানিয়েছেন, ইভ্যালির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বিদেশে টাকা পাচার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, এখন পর্যন্ত ইভ্যালির যত কাগজ আমরা পর্যালোচনা করেছি, আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে বিদেশে অর্থ পাচার হয়ে থাকতে পারে। তবে এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তদন্ত করছে। পরে নিশ্চিত হয়ে জানা যাবে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি তিনি (মোহাম্মদ রাসেল) ও তার স্ত্রী প্রতি মাসেই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতেন। বিশেষ করে দুবাই যেতেন। এসব খতিয়ে দেখছি।’
গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে তারা সাধ্যমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি চলমান প্রক্রিয়া। এমন নয় যে, কালকে চাইলেই আমরা গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে পারবো।’
অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি জানান, গত বছরের ২৩ নভেম্বর কারাগারে থাকা মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসের লকারগুলোর ‘কম্বিনেশন নম্বর’ দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এজন্য আদালতের নিযুক্ত ইভ্যালির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে কারাগারে এ দম্পতির সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করতে আইজি প্রিজন্সকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের কোম্পানি কোর্টের ওই আদেশের পরও লকার দুটির পাসওয়ার্ড পায়নি কমিটি। ফলে লকার কাটার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ইভ্যালির সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী ইভ্যালির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। তারা এখন কারাগারে রয়েছেন।
সূত্র : ঢাকাটাইমস